মার্কিন জালে রুশ সুন্দরী, বেরোতে পারে ‘থলের বিড়াল

দুই দেশের সম্পর্ক বাড়াতে সোমবার বৈঠকে বসেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে অন্তরঙ্গতার পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ নাকচ করেছেন পুতিন। তবে দুই দেশের এমন মধুর সময়ে এক রুশ সুন্দরীকে আটক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাকে রুশ গুপ্তচর বলে দাবি করেছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের পদর্শিত তথ্য প্রমাণে ওই রুশ সুন্দরীর গুপ্তচর হওয়ার সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে। তার সঙ্গে নাম রয়েছে এক উচ্চপদস্থ রুশ কর্মকর্তার। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, সত্যি হলে তাদের থেকে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ইস্যুতে অনেক তথ্যই পেতে পারেন তারা। আর এর মাধ্যমে মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়সহ দুই দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে বেরিয়ে আসতে পারে ‘থলের বিড়াল’।

গত রবিবার ২৯ বছর বয়সি মারিয়া বুতিনা নামের ওই রুশ তরুণীকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্র। মারিয়াকে গ্রেপ্তারের কারণ হিসেবে মার্কিন বিচার বিভাগ জানিয়েছে, মারিয়ার কাজকর্ম সন্দেহজনক। মার্কিন নাগরিকদের সঙ্গে মেলামেশার ধরন এবং এ দেশের নানা রাজনৈতিক গোষ্ঠীতে মারিয়ার ঢুকে পড়া থেকেই মনে করা হচ্ছে, রুশ সরকারের হয়ে চরবৃত্তি ও আমেরিকার রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারই তার লক্ষ্য।

একটি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মারিয়া নাগরিকদের অস্ত্র রাখার অধিকার নিয়ে রুশ প্রচার সংগঠন ‘রাইট টু বিয়ার আর্মস’ এর প্রতিষ্ঠাতা। ফেসবুক পাতায় বন্দুক নিয়ে তার অসংখ্য ছবি রয়েছে। এছাড়া আমেরিকার বন্দুকপন্থী জাতীয় সংগঠনের লোকজনের সঙ্গেও তার সখ্য রয়েছে।

আমেরিকার ন্যাশনাল রাইফেল অ্যসোসিয়েশনের আয়োজিত অনুষ্ঠানেও হাজির ছিলেন তিনি। নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে মাঝেমধ্যেই নৈশভোজের আয়োজন করতেন মারিয়া। শীর্ষস্থানীয় মার্কিন রাজনীতিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে পেছনের দরজা দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণে প্রভাব খাটানো ও আমেরিকার রাজনীতিকে রাশিয়ার পছন্দ মতো পথে চালানোই যার লক্ষ্য বলে মনে করছে মার্কিন বিচার বিভাগ।

বিবৃতিতে তারা বলছে, রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও দুজন মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে মিলে কাজ করছিলেন তিনি। মার্কিন রাজস্ব বিভাগের বিদেশের সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ দপ্তর সম্প্রতি ওই রুশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে বিবৃতিতে ওই কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে সেই ব্যক্তিটি যে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপপ্রধান আলেকজান্দার তরশিন, সেটি বেশ স্পষ্ট।

ফেসবুক পাতায় তরশিনের সঙ্গে প্রচুর ছবি মারিয়ার। গত মার্চে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল তরশিনের। সঙ্গে থাকার কথা ছিল মারিয়ারও। কিন্তু সে সময়েই সংগঠিত অপরাধ চক্র ও মাফিয়াদের সঙ্গে তরশিনের যোগাযোগের কথা সংবাদমাধ্যমে উঠে আসায় শেষ মুহূর্তে ট্রাম্পের সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ বাতিল করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবি যদি সত্যি হয় তবে তরশিন ও মারিয়ার কাছ থেকে অনেক তথ্যই পেতে পারে তারা। যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের বিষয়টিও স্পষ্ট করতে পারে।